দেয়াকে অবশ্যক কর্তব্য করে দিয়েছে। মহানবি (সা.) বলেছেন "আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়।" সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, "কে মুমিন নয়। হে আল্লাহর রাসূল।" জবাবে তিনি বললেন, "যার প্রতিবেশী তার ক্ষতি থেকে নিরাপদ নয়।" (বুখারী ও মুসলিম)।
৬. মান-সম্মানের নিরাপত্তা দেয়া: প্রতিবেশীকে হেয় প্রতিপন্ন না করা, তাকে ঘৃণা না করা, তাকে লজ্জা না দেয়া, তার গীবন না করা, তার বিরুদ্ধে কৎসা রটনা না করা, তার মান-সম্মান রক্ষা করা প্রত্যক মুসলমানের কর্তব । প্রতিবেশ ঈজ্জত আবরুর রক্ষার জন্য প্রতােক মসলিমকে জিম্মাদারী হতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- "ঐ ব্যক্তি মুমিন নয় যার হাত ও জিহ্বার অনিষ্টতা থেকে অন্যসব মুসলিম নিরাপদ নয়।" (মুসলিম)।
৭. কলহ-বিবাদ না করা: প্রতিবেশীর প্রতি কঠিন ভাষা ব্যবহার না করা, বকা-ঝকা না করা, দ্বন্দ্ব-কলহ না করা, ঝগড়া-বিবাদ না করা, প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-- "কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ঝগড়াটে দুই প্রতিবেশী মকদ্দমা পেশ করা হবে ।" (মসনাদে আহমদ)।
৮. দোষক্রটি গােপন রাখা: প্রতিবেশীর মধ্যে কোনাে দোষক্রটি বা বদ অভ্যাস থাকলে তা গােপন রাখা অন্য প্রতিবেশীর কর্তব্য।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষক্রুটি গোপন রাখবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার দোষক্রুটি গোপন রাখবেন।
৯. খাদ্য দান করা: যদি প্রতিবেশী অভাবে থাকে, খাদ্য-পানীয় না থাকে তবে তাদেরকে খাদ্য-দান করা অন্য প্রতিবেশীর কর্তব্য। মহানবি (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি নিজে পেটপুরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকে, সে মুমিন নয়।"
১০. কষ্ট দূর করা: প্রতিবেশী বিপদাপদ বা কষ্টে থাকলে, তা দূর করা অন্য প্রতিবেশীর কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোনাে মুসলিমের দুঃখ কষ্ট দূর করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার দুঃখ কষ্টসমূহের মধ্য হতে একটি বড় কষ্ট দূর করে দিবেন।" (বুখারী ও মুসলিম)।
১১. ধার দেয়া: মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়ােজনীয় ছােটখাটো জিনিসপত্র টাকা পয়সা ইত্যাদি ধার দেয়া প্রতিবেশীর কর্তব্য। মহান আল্লাহ বলেন- অর্থাৎ (দুর্ভাগ সেসব নামাযীর) "যারা নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদি ধার দিতে অস্বীকার করে।" (সূরা মাউন : ৭)
১২. উপহার দেয়া: পারস্পরিক সম্পর্ক সুন্দর ও মধুময় করতে মাঝে মাঝে প্রতিবেশীকে উপহার দেয়া প্রত্যক মুসলমানের কর্তব্য। মহানবি (সা.) বলেছেন, উপহার দাও। তাহলে তােমাদের পরস্পরে ভালােবাসা বৃদ্ধি পাবে।"
১৩. কল্যাণ কামনা করা: উপস্থিত-অনুপস্থিত সকল মুসলমানের কল্যাণ কামনা করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। তাই প্রতিবেশীর কল্যাণ কামনা করতে হবে। মহানবি (সা.) বলেছেন "এক মুমিন অপর মুমিনের ভাই। সে তাকে ধ্বংসাত্মক বিষয় থেকে রক্ষা করে এবং তার অনুপস্থিতিতে তার স্বার্থ রক্ষাকরে।" (তিরমিযী)।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায়, মানুষ পরস্পরের মুখাপেক্ষী। অন্যের সাহায্য ছাড়া সে চলতে পারে না। তাই সামাজিক জীব হিসেবে প্রতিবেশীকে সাহায্য করা ইমানের দাবি। অতএব, প্রতিবেশীর প্রতি যে সব কর্তব্য ইসলাম আরােপ করেছে, তা আদায় করা প্রত্যেক মুমিনের অবধারিত কর্তব্য।